পাঠ-৭ : বাংলাদেশে এইচআইভি ও এইডস-এর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান :

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৫) - শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা - মাদকাসক্তি ও এইডস | | NCTB BOOK
7
7

বর্তমান বিশ্বে এইডস এবং যৌনরোগ সংক্রমণ বহুল আলোচিত বিষয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৮১ সালে সর্বপ্রথম এইডস শনাক্ত হয়। এইডস এমনই মারাত্মক যে, তা মানুষের প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল কমিয়ে দেয় ও একটি দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে বাধাগ্ৰস্ত করে। এইডস মানব সভ্যতা এবং উন্নয়নের ক্রমাগত বিকাশের পথে অন্যতম প্রধান অন্তরায় হিসেবে দেখা দিয়েছে। বর্তমানে বিশ্বে প্রতিদিন আক্রান্ত লোকের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। UNAIDS-এর তথ্য অনুযায়ী পৃথিবীব্যাপী প্রতি বছর নতুনভাবে এইচআইভি আক্রান্তদের অর্ধেকই হচ্ছে ২৫ বছরের কম বয়সী কিশোর-কিশোরী/যুবক-যুবতী। আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন কারণ, যেমন- শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার সুযোগের অভাব ও আর্থিক অসামর্থ্য বিশ্বের দরিদ্র দেশসমূহের অল্পবয়সী জনগোষ্ঠীকে এইচআইভি সংক্রমণে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে। বাংলাদেশেও এইচআইভি/এইডস-এর প্রাদুর্ভাব হয়েছে। তবে সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এটি এখনও মারাত্মক আকার ধারণ করেনি। তবুও বিশ্ব পরিস্থিতি বিশেষ করে আঞ্চলিক পরিস্থিতির কারণে আমাদের নিষ্ক্রিয় থাকার কোনো অবকাশ নেই। আমাদের প্রতিবেশী দেশসমূহ যথা- ভারত, মায়ানমার, চীন, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ডে এইচআইভি/এইডস-এর ব্যাপক বিস্তৃতি লক্ষ করা যাচ্ছে। তাই এ দেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠার আগেই আমাদের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। বাংলাদেশে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর যেমন মাদক গ্রহণকারী, মহিলা ও পুরুষ যৌনকর্মী, সমকামী, পেশাদার রক্ত বিক্রেতা, ভ্রাম্যমাণ জনগোষ্ঠী ইত্যাদির মধ্যে সামগ্রিকভাবে এইচআইভি সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব ১% এর নিচে। একই সুচ ও সিরিঞ্জ একাধিক ব্যক্তি কর্তৃক ব্যবহারের মাধ্যমে মাদকদ্রব্য গ্রহণকারীদের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের হার প্রায় মহামারী পর্যায়ে পৌঁছেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে এইচআইভি সংক্রমণের হার সামগ্রিকভাবে কম হলেও (অর্থাৎ শতকরা এক ভাগের নিচে) আগামীতে এ হার এরকমই থাকবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এইডস মহামারী আকারে শুরুতেই প্রকাশ পায় না। বাংলাদেশেও যে এ মহামারীর বিস্ফোরণ ঘটবে না তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। এইডস-এর কোনো কার্যকর প্রতিকার ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত আবিষ্কার  করা সম্ভব হয়নি। তাই এর প্রতিরোধের ব্যবস্থার কথাই বলতে হয়। সমগ্র বিশ্ববাসী প্রতি বছর ১লা ডিসেম্বর ‘বিশ্ব এইডস দিবস' পালন করে। এই বিশেষ দিনে বিশ্বের সকল দেশ স্ব স্ব অবস্থান থেকে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়ে এইডস প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে।

কাজ-১ : শিক্ষার্থীরা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে কী কী ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ বাংলাদেশে এইচআইভি/এইডস মহামারীর রূপ নিতে পারে তার একটি তালিকা তৈরি কর এবং শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন কর। |

কাজ- ২ : বিশ্ব এইডস দিবস পালনের জন্য একটি কর্মসূচি প্রণয়ন করে শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন কর ।



 

Content added By
Promotion